লোহা দিয়ে লোহা কাটা

লোহা দিয়ে লোহা কাটা” হয়। অনুরূপ শত্রু দিয়ে শত্রু ধ্বংস করা হয়। যেমন “কাটা দিয়ে কাঁটা তোলা” হয় এবং বলা হয়, “লোহায় লোহা কাটে, বিষে কাটে বিষ”। অনেকেই বড় চাতুর্য ও কৌশলের সাথে জাতিরই কোন লোক দিয়ে তারই জাত-ভাইকে খুন করায়। যেমন “ঢিল দিয়ে ঢিল ভাঙ্গা” হয় এবং স্বজাতির লোককে তারই জাত ভাইয়ের ক্ষতি করার কাজে ব্যবহার হয়, তেমনি উপকার হয় তখন, যখন, “চোরে চোর ধরে ঢেমনে ঢেমন”।

হিংসার মাধ্যমে শান্তি আসে না—এ কথা যেমন সত্য, তেমনি হিংসা ছাড়া শান্তি প্রতিষ্ঠালাভ করে না—এ কথাও অসত্য নয়। লোহা কাটার জন্য লোহার করাতেরই দরকার হয়। লোহার পেরেক মারতে লোহার হাতুড়ির প্রয়োজন। লোহার আঘাত দিয়ে লোহার ময়লা ছাড়ানো যায়। কিন্তু লোহার আঘাত দিয়ে কাচের ময়লা ছাড়াতে গেলে লাভের জায়গায় পুঁজিই হারিয়ে যায়। কারো গায়ে মশা বা মাছি বসলে তার উপকার করতে গিয়ে ইট বা পাথর দিয়ে তা মারতে গেলে বাত ভালো করতে গিয়ে কুষ্ঠব্যাধির সৃষ্টি হয়। দ্বীনের দাঈদের এ কথা স্মরণে রাখা খুবই প্রয়োজন। দাওয়াতের কাজে হিকমত একটি অতি প্রয়োজনীয় জিনিস।

আরো মনে রাখা দরকার যে, একটি অন্যায় দ্বারা অপর অন্যায়কে এবং একটি হিংসা দ্বারা অপর হিংসাকে দূর করা যায় না। আগুনকে আগুন দ্বারা নয়, বরং পানি দ্বারা নিভানো যায়।

একদা লোকমান হাকীম তার পুত্রকে বললেন, ‘বেটা! যারা বলে যে, মন্দকে মন্দ দ্বারা দূর করা যাবে, তারা মিথ্যা ও ভুল বলে। আর তারা যদি এ কথায় সত্যবাদী হয়, তাহলে পাশাপাশি দু’টি আগুন লাগিয়ে দেখুক না, একটি আগুন অপর আগুনকে নিভাতে পারে কি না? বরং সত্য এই যে, মন্দকে ভাল দ্বারা দূর করা যায়; যেমন আগুনকে নিভানো যায় পানি দ্বারা।

আর মহান আল্লাহ বলেছেন,

{ادْفَعْ بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ السَّيِّئَةَ نَحْنُ أَعْلَمُ بِمَا يَصِفُونَ} (96) سورة المؤمنون

“তুমি ভালো দ্বারা মন্দের মুকাবিলা কর। তারা যা বলে, আমি সে সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত।” (মু’মিনূনঃ ৯৬)

সংগ্রহে : আব্দুল হামীদ আল-ফাইজী আল-মাদানী

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *