আপনি নাম্বার ওয়ান হিরো হন। আমি জানি, আপনি মুসলিম, আপনি ট্রিপল জিরো নন।
“কুকুরের লজ্জা নেই” বলে অনেক নির্লজ্জ মানুষকে তিরস্কার করা হয়। পরন্তু লজ্জা নারীর ভূষণ, মু’মিন মানুষের লজ্জা ঈমানের অংশবিশেষ। বলা বাহুল্য, মু’মিন পুরুষ হবে লজ্জাশীল এবং মু’মিন নারী হবে লজ্জাবতী। মহানবী (সাঃ) বলেছেন,
(( الإيمَانُ بِضْعٌ وَسَبْعُونَ أَوْ بِضْعٌ وَسِتُّونَ شُعْبَةً: فَأفْضَلُهَا قَوْلُ: لاَ إلهَ إِلاَّ الله، وَأدْنَاهَا إمَاطَةُ الأَذَى عَنِ الطَّرِيقِ، وَالحَيَاءُ شُعْبَةٌ مِنَ الإيمَانِ)).
“ঈমানের সত্তর অথবা ষাঠ অপেক্ষা কিছু বেশি শাখা রয়েছে। তার মধ্যে সর্বোত্তম শাখা ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলা এবং সর্বনিম্ন শাখা পথ থেকে কষ্টদায়ক জিনিস সরিয়ে দেওয়া। আর লজ্জা ঈমানের একটি শাখা।” (বুখারী ৯, মুসলিম ১৬২নং)
((إنَّ الحَيَاءَ والإِيمانَ قُرِنا جَميعاً فإذا رُفِعَ أحدُهُما رُفِعَ الآخَرُ)).
“অবশ্যই লজ্জাশীলতা ও ঈমান একই সূত্রে গাঁথা। একটি চলে গেলে অপরটিও চলে যায়।” (হাকেম ৫৮, মিশকাত ৫০৯৪, সহীহুল জামে ১৬০৩নং)
প্রকৃত সুন্দর-সুন্দরী হল সেই মানুষ, যার লজ্জা আছে। লজ্জাশীলতা মানুষকে মনোহর করে তোলে। মহানবী (সাঃ) বলেছেন,
((مَا كَانَ الْفُحْشُ فِي شَيْءٍ قَطُّ إِلَّا شَانَهُ وَلَا كَانَ الْحَيَاءُ فِي شَيْءٍ قَطُّ إِلَّا زَانَهُ)).
“অশ্লীলতা (নির্লজ্জতা) যে বিষয়েই থাকে, সে বিষয়কে তা সৌন্দর্যহীন (ম্লান) করে ফেলে। আর লজ্জাশীলতা যে বিষয়েই থাকে, সে বিষয়কে তা সৌন্দর্যময় (মনোহর) করে তোলে।” (আহমাদ ১২৬৮৯, বুখারীর আল-আদাবুল মুফরাদ, সহীহ তিরমিযী ১৬০৭, ইবনে মাজাহ ৪১৮-৫৮, সহীহুল জামে ৫৬৫৫নং)
কুকুর কী না করে? যেহেতু তার লজ্জা নেই। নির্লজ্জ নারী-পুরুষও যাচ্ছেতাই করতে পারে। যেহেতু তাদের লজ্জা হয় না, আল্লাহকে লজ্জা করে না, মানুষকেও না।
মহানবী (সাঃ) বলেছেন,
((إِنَّ مِمَّا أَدْرَكَ النَّاسُ مِنْ كَلَامِ النُّبُوَّةِ إِذَا لَمْ تَسْتَحْيِ فَاصْنَعْ مَا شِئْتَ)).
“প্রথম নবুয়তের বাণীসমুহের যা লোকেরা পেয়েছে তার মধ্যে একটি বাণী এই যে, তোমার লজ্জা না থাকলে যা মন চায় তাই কর।” (আহমাদ ১৭০৯০, বুখারী ৩৪৮৪, আবু দাউদ ৪৭৯৯, ইবনে মাজাহ ৪১৮৩, সহীহুল জামে ২২৩০নং)
কুকুরের চরিত্র নীচ। মানুষের চরিত্র সুউচ্চ। লজ্জাশীলতা সচ্চরিত্রতার প্রধান অংশ। মহানবী (সাঃ) বলেছেন,
((إِنَّ لِكُلِّ دِينٍ خُلُقًا ، وَخُلُقُ الإِسْلامِ الْحَيَاءُ)).
“প্রত্যেক ধর্মে সচ্চরিত্রতা আছে, ইসলামের সচ্চরিত্রতা হল লজ্জাশীলতা।” (ইবনে মাজাহ ৪১৮১-৪১৮২, সহীহুল জামে ২১৪৯নং)
খাওয়ারিযমী বলেছেন, “মানুষের মাঝে চরিত্র থাকলে সে ১ নম্বর থাকে। অতঃপর তার মধ্যে রূপ থাকলে তার পাশে একটি শূন্য যোগ হয়ে ১০ হয়। অতঃপর তার ধনবত্তা থাকলে আরো একটি শূন্য যোগ হয়ে ১০০ হয়। অতঃপর তার কৌলীন্য থাকলে আরো একটি শূন্য যোগ হয়ে ১০০০ হয়। কিন্তু ১ সংখ্যাটি অর্থাৎ চরিত্র বাদ পড়লে মানুষের মুল্য চলে যায় এবং পাশের শুন্যগুলি অকেজো হয়ে অবশিষ্ট থাকে।“
অতএব চরিত্র সুন্দর রেখে আপনি নাম্বার ওয়ান হিরো হন। আমি জানি, আপনি মুসলিম, আপনি ট্রিপল জিরো নন।
সংগ্রহে : আব্দুল হামীদ আল-ফায়জী আল-মাদানী