মুসলিম নওজোয়ানরা কোথাও কোথাও জিহাদের নামে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করার স্বপ্ন দেখছেন। ইসলামের বড় বড় উলামাগণ যা অবৈধ ঘোষণা করেছেন। এই জিহাদী চিন্তাধারা তখনই বাস্তবায়ন হয়, যখন প্রথমতঃ কোন মুসলিম রাষ্ট্রনেতাকে ‘কাফের’ ফতোয়া দেওয়া হয়। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে অস্ত্র প্রয়োগ সম্ভব নয়। কারণ তাঁরা জানেন যে, মহান আল্লাহ বলেছেন, “যে ব্যক্তি কোন মু’মিনকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করবে তার শাস্তি হবে জাহান্নাম, সেখানেই সে চিরকাল থাকবে এবং আল্লাহ তার প্রতি রুষ্ট হবেন, তাকে অভিসম্পাত করবেন এবং তার জন্য মহাশাস্তি প্রস্তুত করে রাখবেন।” (সূরা নিসা ৯৩ আয়াত)
আল্লাহর রসূল বলেছেন, “যে ব্যক্তি কোন (মুসলিম রাষ্ট্রে বসবাসকারী) যিম্মী (অথবা সন্ধিচুক্তির পর বিপক্ষের কাউকে) হত্যা করবে, সে ব্যক্তি বেহেশ্বের সুবাসও পাবে না। অথচ তার সুবাস ৪০ বছরে অতিক্রম্য দূরবর্তী স্থান হতে পাওয়া যাবে।” (আহমাদ, বুখার, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ)
তিনি আরো বলেছেন, “মু’মিন ব্যক্তি তার দ্বীনের প্রশস্ততায় থাকে, যতক্ষণ না সে কোন অবৈধ রক্তপাতে লিপ্ত হয়।” (বুখারী)
তিনি আরো বলেছেন, “যখন দু’জন মুসলমান তরবারি নিয়ে আপোসে লড়াই করে, তখন হত্যাকারী ও নিহত দু’জনই দোযখে যাবে।” সাহাবী বললেন, ‘হে আল্লাহ রসূল! হত্যাকারীর দোযখে যাওয়া তো স্পষ্ট; কিন্তু নিহত ব্যক্তির ব্যাপার কি?’ তিনি বললেন, “সেও তার সঙ্গীকে হত্যা করার জন্য লালায়িত ছিল।” (বুখারী-মুসলিম)
সুতরাং কাউকে ‘কাফের’ না বানানো পর্যন্ত তাকে খুন করা হচ্ছে না। আর তার জন্যই তাঁদের নিকট থেকে যাকে-তাকে ‘কাফের’ বলতে শোনা যায়। অথচ বিষয়টি বড় আত্মবিধ্বংসী।
এ ব্যাপারে আমার ‘যুব-সমস্যা ও তার শরয়ী সমাধান’ পুস্তকে অনেক কিছু লিখেছি এবং বলেছি যে, এই শ্রেণীর তৎপরতায় লাভ হয় দুশমনদেরই। তাতে ‘জলের ছিটে দিয়ে লগীর গুঁতো খাওয়া’ হয় এবং বদনাম হয় মুসলিমরা।
বড় বড় উলামায়ে কিরাম এই সর্বনাশিতার ব্যাপারে সতর্ক হয়ে বিভিন্ন বই-পুস্তক প্রকাশ করেন। তার মধ্যে শায়খ আব্দুল লাতীফ বিন আব্দুর রহমান আ-লে শায়খের ‘উসূলুত তাকফীর’ এবং শায়খ মুরাদ শুকরীর ‘ইহকামুত তাক্বরীর, লিআহকামি মাসআলাতিত তাকফীর’ বই দু’টি অন্যতম। এ ছাড়া শায়খ ইবনে বায, শায়খ ইবনে উসাইমীন (রঃ) প্রমুখ উলামাগণের ফতোয়া উদ্ধৃত ক’রে এই পুস্তিকা আমি আমাদের যুবকদলকে উপহার দিতে প্রয়াস পাই।
আমার বড় আশা এই যে, বক্ষ্যমাণ পুস্তিকাটি আমার যুবক ভাইদের দ্বীনী স্পৃহা ও আবেগের গাড়ির ব্রেক স্বরূপ কাজে দেবে — ইন শাআল্লাহ। আল্লাহ সকলকে সঠিক ও সরল পথ প্রদর্শন করুন। আমীন।
Reviews
There are no reviews yet.