মহান আল্লাহ আমাদের সৃষ্টিকর্তা। মুসলিম-অমুসলিম সমস্ত মানুষের পালনকর্তা। “সমস্ত মানুষ (প্রথমে) এক জাতিই ছিল, অতঃপর তারা মতভেদ সৃষ্টি করল।” (সূরা ইউনুস ১৯ আয়াত)
একই পিতা-মাতা থেকে সৃষ্ট মানুষ এক সময় এক জাতিই ছিল। অতঃপর কালের আবর্তনে তারা শত-সহস্র মত ও পথ নিয়ে বিভক্ত হয়ে যায়।
“মানুষ (আদিতে) একই জাতিভুক্ত ছিল। (পরে মানুষেরাই বিভেদ সৃষ্টি করে।) অতঃপর আল্লাহ নবীগণকে সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরপে প্রেরণ করেন; এবং মানুষের মধ্যে যে বিষয়ে মতভেদ সৃষ্টি হয়েছিল, তার মীমাংসার জন্য তিনি তাদের সাথে সত্যসহ কিতাব অবতীর্ণ করেন, আসলে যাদেরকে তা দেওয়া হয়েছিল স্পষ্ট নিদর্শনাদি তাদের নিকট আসার পর তারাই শুধু পরস্পর বিদ্বেষবশতঃ মতভেদ সৃষ্টি করেছিল। অতঃপর তারা যে বিষয়ে মতভেদ করত, আল্লাহ বিশ্বাসীদেরকে সে বিষয়ে নিজ ইচ্ছায় সত্য-পথে পরিচালিত করেন। আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সরল পথে পরিচালিত ক’রে থাকেন।” (সূরা বাক্বারাহ ২ ১৩ আয়াত)
মহান প্রতিপালকের ধর্ম একটাই, পথ একটাই। বিভিন্ন পথের মধ্যে হকপথ একটাই। মহান আল্লাহর একটি নাম আল-হাক্ক। তিনি মানুষকে হক পথের সন্ধান দেন, হক গ্রহণ করতে বলেন। হক কথা বলতে, হক পথে চলতে, হক বিচার করতে, হক প্রচার করতে, হকের অসিয়ত করতে উপদেশ দেন। হকপথ একটাই। তিনি সেই পথ অবলম্বন ক’রে সুখময় বেহেশতের হকদার হতে বলেন।
মহান সৃষ্টিকর্তার আদেশ, “নিঃসন্দেহে তোমাদের এ জাতি, একই জাতি। আর আমিই তোমাদের প্রতিপালক। অতএব তোমরা আমার উপাসনা কর।” (সূরা আম্বিয়া ৯২-৯৩ আয়াত)
কিন্তু হক জানতে, চিনতে ও মানতে মানুষ বহু দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়ে। নানা বাধা ও অসুবিধা হকপথের অন্তরায় হয়। তা সত্ত্বেও সেই সমূহ বাধা ও অসুবিধা ডিঙিয়ে হকের নাগাল পেতে হয়, হককে সাদরে বুক পেতে হৃদয় খুলে স্থান দিতে হয়।
আবার হককে হক বলে মেনে নেওয়ার পরেও নানা প্রতিবন্ধকতা ও কষ্টের শিকার হতে হয়। হককে ভালবাসার পথে নানা কঠোর পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়। ফলে অনেক হকপন্থী হকচ্যুতও হয়ে যায়, অনেকের পদস্খলন ঘটে, অনেকে হতাশার অন্ধকারে নিজেকে হারিয়ে ফেলে।
আমি এই পুস্তিকায় কেবল সেই ভাইটির কথাই বলেছি, যে হকের সন্ধানে নিজের মনকে উদার করেছে এবং যে হকের দিশা পেয়ে কোন কষ্টে ভুগছে।
হিদায়াতী ভাইটি আমার! আল্লাহ তোমাকে হকের দিশা দিন, হকের উপর অবিচল থাকার তওফীক দিন, হকপথ তোমার মনোরথ হোক।
বিনীত—
আব্দুল হামীদ মাদানী
আল-মাজমাআহ
৮/১২/২০০৯
Reviews
There are no reviews yet.